মোঃ তাহেরুল ইসলাম,নীলফামারী প্রতিনিধি; জনবল সংকটের কারণে চরম অব্যবস্থাপনা ও অপরিচ্ছন্ন নোংরা পরিবেশে চলছে নীলফামারী সদর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা। সব সাধারণ ওয়ার্ডেই রোগীরা গাদাগাদি করে আছেন। এ ছাড়া বেডের অভাবে অনেককেই দেখা যায় মেঝেতে চিকিৎসা নিতে। এরই মধ্যে রোগীর পাশাপাশি কুকুরও অবস্থান করছে হাসপাতালের ভেতরেই ,এ বিষয়ে  হাসপাতালের তত্ত্বাধায়ক সাথে কথা বলে, বিষয়টি এড়িয়ে যান ।
১০০ থেকে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে উন্নীত হলেও আজও ১০০ শয্যারই জনবল নিয়ে চলছে নীলফামারী হাসপাতাল। জেলাসহ আশপাশের কয়েক উপজেলার প্রায় ১০ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে হাসপাতালটিকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। তবে ৮ তলাবিশিষ্ট নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ ৬ তলা পর্যন্ত সম্পন্ন হলেও আজও সেখানে পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি। ডাক্তারের অভাবে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বেডের অভাব, নোংরা পরিবেশ। মেঝেতে মানুষ-কুকুর একসঙ্গে শুয়ে।
চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন রোগী জানান, ডাক্তারের অভাবে চিকিৎসা নিতে আসা অনেক রোগীই ফিরে যাচ্ছেন। এ ছাড়া নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ ছাড়া অধিকাংশ ওষুধ বাহির থেকে কিনতে হয় রোগীদের।
এদিকে সিনিয়র, জুনিয়র কনসালট্যান্ট ও ডাক্তারের অভাবে কার্ডিওলজি (হৃদ্‌রোগ) বিভাগ দেড় বছর আগে উদ্বোধন হলেও আজও রুমগুলো তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। রুমগুলোর যন্ত্রপাতিতে ধুলার স্তূপ জমে আছে। এ ছাড়া চোখ ও স্কিন বিভাগে ডাক্তারের অভাবে চিকিৎসা থেকে সাধারণ রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন
হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীরা বলছেন, এখানে ভালো চিকিৎসা পাওয়ার কোনো পরিবেশ নেই। জটিল রোগী এলেই কোনো প্রকার প্রাথমিক চিকিৎসা না দিয়েই পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে রংপুর মেডিকেলে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. গোলাম রসুল রাখি বলেন, ‘জনবল সংকটের পরও আমরা প্রতিদিন আউটডোরে হাজারেরও বেশি এবং ইনডোরে তিন থেকে সাড়ে তিনশ রোগীর চিকিৎসাসেবা দিচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ভবনের অভাবে রোগীদের মেঝেতে রাখতে হচ্ছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাধায়ক ডা. মো. আবু আল-হাজ্জাজ বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে পুরাতন ভবনের চাপ কমাতে নতুন ভবনে জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ, ফার্মেসি এবং টিকিট কাউন্টার স্থানান্তর করেছি। লিফট চালু হলে কয়েক মাসের মধ্যে আমরা আরও কিছু বিভাগকে দোতলায় নিয়ে যাব। সেখানে আরও ১০০ বেডের ব্যবস্থা হবে।’
হাসপাতালটিতে বর্তমানে ৫৮ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ৪০ জন। সিনিয়র কনসালট্যান্ট ১০ জনের জায়গায় আছে মাত্র ৩ জন, জুনিয়র কনসালট্যান্ট ১৩ জনের জায়গায় আছে ৫ জন। নার্স ১৫০ জনের বিপরীতে আছে ১৪০ জন।